সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন শিক্ষা ভবনের সামনে ৭ কলেজ ছাত্রের বিক্ষোভ এবং সড়কে পুলিশ ব্যারিকেড ২০২৫ সালে হজে নিবন্ধন শেষ হয়েছে ৪৩,৩৭৪ জনের প্রতিটি চার নারীর মধ্যে তিনজনই সহিংসতার শিকার: স্বাস্থ্য ও সামাজিক জরিপ ঢাকার সাবেক চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম সাময়িক বরখাস্ত শীতের আগমনী বার্তা: আবহাওয়া অফিসের শৈত্যপ্রবাহের আগাম সতর্কতা নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মির্জা ফখরুল বলছেন, এ দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি গ্রহণ করবে না সচেতনতা ও টিকাদানেই টাইফয়েড নিয়ন্ত্রণ সম্ভব: নূরজাহান বেগম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা: আমার ছেলে-মেয়েরা দেশে, আমি কি ভাবে নিরাপদ থাকব? প্রধান উপদেষ্টা রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন
আপনার লেখায় আমার ভালো লাগে না, শাওনের পোস্টের পর গুলতেকিনের মন্তব্য

আপনার লেখায় আমার ভালো লাগে না, শাওনের পোস্টের পর গুলতেকিনের মন্তব্য

প্রয়াত খ্যাতিমান নাট্যকার ও লেখক হুমায়ূন আহমেদের আত্মজীবনীমূলক বই ‘নিউইয়র্কের নীলাকাশে ঝকঝকে রোদ’ এর এক অংশ নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। এই বইটি হুমায়ূন আহমেদ নিউইয়র্কে ক্যানসারে আক্রান্ত থাকার সময় লিখেছিলেন, যেখানে মানসিক অসুস্থতা ও বিকৃত মানসিকতার মানুষের নির্মমতা ফুটিয়ে তোলার পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও উঠে এসেছে।

রোববার (৫ অক্টোবর) নিজের ফেসবুকে শাওন শেয়ার করেছেন, কিভাবে তাঁর স্বামী হুমায়ূন আহমেদের অসুস্থতার সময় এক ব্যক্তি ফেসবুকে বিদ্রূপমূলক মন্তব্য করেছিলেন। একজন কমেন্টারে লিখেছিল, ‘তোমার উচিত শিক্ষা হয়েছে। আমি খুশি যে আল্লাহ তোমার স্বামীকে ক্যানসার দিয়ে তোমাকে শিক্ষা দিলেন।’

শাওন উল্লেখ করেছেন, কীভাবে সেই সময় তিনি দেখলেন তার স্বামী কম্পিউটারের স্ক্রিনে তাকিয়ে অশ্রু অঁকুর ফেলছিলেন। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কী সমস্যা। স্বামী বললেন, মন খারাপ। তিনি তাঁর পাশে বসে সহযোগিতা করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু হুমায়ূন বললেন, ‘আমি চাই না, তুমি আমার মন খারাপটা বুঝো।’ এরপর তিনি জানতে চান, কী লিখেছিল সেই ব্যক্তি। শাওন পড়লেন, সেখানেই ঘোষণা ছিল, ‘তোমার উচিত শিক্ষা হয়েছে। আমি খুশি যে তোমার স্বামীকে ক্যানসার দিয়ে আল্লাহ তোমাকে শাস্তি দিলেন।’ এটি এমনই একটি বার্তা যা হুমায়ূনের বিরল সময়েও শুনতে হয়েছে, আর তার মেয়ে লীলাবতীর মৃত্যুর সময়ও এই ধরনের মন্তব্য তাকে হতবাক করেছিল। এই নোংরা মন্তব্যগুলোতে লেখা ছিল, ‘তোমার কঠিন শাস্তি হল, আরও শাস্তি হবে।’

শাওন লেখেন, এই ধরনের তুচ্ছ মন্তব্যে তিনি খুবই ভেঙে পড়েন, কিন্তু স্বামীর জন্য তিনি শক্তি খুঁজে বের করেন। একজন লেখক এবং তার স্ত্রী হিসেবে তিনি তাঁদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট করেন, যে মানুষের মানসিক অসুস্থতাকে তাঁদের চিন্তার যোগ্য মনে করেন, এবং এই সময়টিতে মানুষের ভাল ও সুন্দর দিকগুলোই দেখতে থাকেন। তিনি বলেন, “আমাদের আশেপাশে মানসিকভাবে বিকৃত অনেক মানুষ রয়েছে। তবে আমাদের মনোযোগ থাকা উচিত সুস্থ মানুষের দিকে। অনেক চমৎকার মানুষ প্রতিদিন নানা সুন্দর কথা লিখছেন। থাকলে তারাও জানাতে চান, তাদের সুস্থ দিকগুলো।”

শেওন আরও বলেন, তাঁর একজন প্রিয় বন্ধু মক্কায় কাবা শরিফ থেকে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমি আপনার জন্য দোয়া করছি। আপনি একটুও চিন্তা করবেন না। আপনি সুস্থ থাকবেন।’ তিনি এটাই তুলে ধরেছেন, এই কঠিন সময়ে মানুষের মানবিক গুণাবলী এবং শুভ আশা দেখার গুরুত্ব।

বইয়ে হুমায়ূন আহমেদ আরও একটি অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেছেন, যেখানে তিনি বিকৃত মানসিকতার এক যুবকের মুখোমুখি হয়েছেন। এই যুবক তাকে দেখা করার জন্য প্রচণ্ড হাস্যরসিক কাণ্ডকারখানা করে, এবং শেষ পর্যন্ত গেটের সামনে এমন অবস্থা হয় যেন তারা ঝগড়া করছে। যুবকের বয়েস আনুমানিক ২৩-২৪ বছর, চোখ-মুখ কঠিন। হুমায়ূন তাকে জিজ্ঞেস করেন, কেন এত ব্যস্ত হয়ে তাকে দেখা করতে চাইছেন। যুবক তখন বলেছিলেন, ‘তোমার লেখাটা আমার জঘন্য লাগে।’ এই মন্তব্য শুনে হুমায়ূন অবাক হন এবং জিজ্ঞেস করেন, ‘এত ঝামেলা করে এই কথাটা বলার জন্য।’ যুবক উত্তরে জবাব দেয়, ‘হ্যাঁ, কারণ সরাসরি বলতে সাহস করে না, সবাই তো তোমার চামচা।’ এরপর যুবক ইংরেজিতে বলে, ‘আই ওয়ান্ট ইউ টু ডাই সুন’ অর্থাৎ, ‘আমি চাই তোমার দ্রুত মৃত্যু হোক’। হুমায়ূন শান্তভাবে উত্তর দেন, ‘আমি আশা করি, তোমার জীবন দীর্ঘ ও অর্থপূর্ণ হবে।’ এই ঘটনায় তিনি বোঝাতে চান, হিংসে ও বিদ্বেষের মানুষ নানা রকম অপ্রত্যাশিত কথা বলে যেতে পারে, তবে আমাদের মনোযোগ থাকা উচিত সুন্দর ও ইতিবাচক মানুষের দিকে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd